Thursday, 22nd May, 2025
Thursday, 22nd May, 2025

সরিষা ফুলের মধু আহরণে বেড়েছে ফলন, মধুতে বাড়তি লাভ

বসন্তে সরিষা ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্য শোভা বাড়িয়েছে প্রকৃতিতে। সরিষা ফুলের রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর। মৌমাছি সরিষা থেকে প্রাকৃতিকভাবে মধু সংগ্রহ করে আর মৌচাক থেকে সেই মধু আহরণ করে খামারি। এতে লাভবান হচ্ছে খামারি। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, সরিষার সঙ্গে মৌমাছির সম্পর্কের কারণে সরিষার ফলন বাড়ছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক।

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া গ্রামে শত শত একর জমিতে হলুদের সমারোহ। উৎপাদন ভালো হওয়ায় মাঠের পর মাঠে শুধু সরিষা। কোনো মাঠ হলুদ ফুলে ভরে গেছে, আবার কোথাও সরিষায় দানা হয়েছে।
ওই গ্রামের কৃষক এনায়েত করিম টিটুসহ বেশ কয়েকজন এবার বিনা সরিষা-১১ চাষ করে বাজিমাত করেছেন। অন্যান্য বছর সিমীত পরিসরে সরিষা চাষ করলেও এবার বিনা সরিষা-১১ এর বাম্পার ফলনে লাভের আশা করছেন তারা। স্বল্প জীবনকালের এই সরিষা আবাদে খুশি কৃষকরা।

এ বছর জেলায় ব্যাপক পরিসরে সরিষার আবাদ হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ করছেন মো. আয়নাল হক নামে এক খামারি। টাঙ্গাইল থেকে বরিশাল এসে সরিষা ক্ষেতের পাশে করেছেন মধু সংগ্রহের খামার। ১০৫টি বাক্সে ৮ শতাধিক চাক বসিয়েছেন এই খামারি। গত ১৫ দিনে ৭ মণ মধু আহরণ করেছেন তিনি। মৌসুমের বাকি সময়ে আরও ৫ মণ মধু আহরণের আশা করছেন। ৫০০ টাকা কেজি দরে ক্রেতা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মধু পাঠাচ্ছেন খামারি আয়নাল হক। কম মূল্যে মধু কিনতে পেরে খুশি স্থানীয়রাও।

রাকুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন বলেন, তাদের চোখের সামনেই আয়নাল হক সরিষা ফুল থেকে চাকের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করেন। এই মধু ভেজালবিহীন। এ কারণে আস্থা নিয়ে তার কাছ থেকে মধু কিনছেন তারা।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বরিশাল উপ-কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ছয়েমা খাতুন বলেন, মৌমাছি বসন্তের সময়ে ফুলের মৌ (রস) সংগ্রহ করতে গিয়ে পরাগায়ন ঘটায়। সরিষার সঙ্গে মৌমাছির সম্পর্কে এর আবাদ বাড়ে। এতে দুইভাবে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয় কৃষক। মধুতে সেলুলোজ, ডেক্সট্রোজ, ভিটামিন ও নানা খনিজ পদার্থ থাকায় মানবদেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। প্রাকৃতিকভাবে সংগৃহীত এই মধু খুবই উপকারী বলে তিনি জানান।

বরিশাল জেলায় এ বছর ৫০০ হেক্টর জমিতে বিনা সরিষা-১১ আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ১৫ থেকে ১৬ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে জেলায় এবার সাধারণ জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে।

সংবাদটি লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন