
বাড়িতে বাবার লাশ, আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে চারপাশ। এমন পরিস্থিতিতে চোখের পানি মুছতে মুছতে হাতে প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যায় রানা শেখ (১৬)।
রানা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার জুঙ্গুরদি গ্রামের মজিবর শেখের (৪৬) ছেলে। সে নগরকান্দা সরকারি মহেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) একাডেমি থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার ভোর রাতে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে রানার বাবা মারা যান।
সকালে রানার কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা ছিল। তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে সকালেই রানার কয়েকজন সহপাঠী তার বাড়িতে যায়। রানার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সহপাঠীরা সান্ত্বনা দিয়ে রানাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
নগরকান্দার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে রানা কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা দেয় সে।
পরীক্ষা দিয়ে দুপুরে রানা বাড়িতে ফিরলেই বিকালে তার বাবা মজিবর শেখের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে পরীক্ষা সহ-কেন্দ্র সচিব মো. মাহাবুব আলী মিঞা জানান, যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রানা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বাবা মারা যাওয়ায় সে অনেকটা ভেঙে পড়েছিল। পরীক্ষা চলাকালে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নিয়েছি।
রানার স্কুল সরকারি এম এন একাডেমির প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, সকালেই রানার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এটি খুবই কষ্টদায়ক, কিন্তু সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। আমরা সকালেই রানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তার মনমানসিকতা ভালো রাখতে ও ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে আমরা রানার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি।