Thursday, 22nd May, 2025
Thursday, 22nd May, 2025

দিনাজপুরে আগাম জাতের ধান কাটার ধুম

দিনাজপুরে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জেলায় এবার ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে সীমিত আকারে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের ধান।

নতুন ধান কেটে বাড়িতে আনায় নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে সৌরভ ছড়াচ্ছে কৃষকের ঘর। অন্যদিকে, নতুন ধান কেটে মাড়াই করে খড়ের দামও পাচ্ছে কৃষক। এতে কৃষকরা খুশি।
হেমন্তে নবান্নের আনন্দে আগাম সোনালি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। ইতিমধ্যে বাড়ির উঠোন ভরে উঠছে নতুন ধানে। চারদিকে ধানের ম-ম গন্ধ। আনন্দ আর উৎসবে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে পিঠাপুলির নানা আয়োজন।

আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। গত মৌসুমে আগাম জাতের বিনা-৯০ ধানের ৭৫ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছিল ৪২০০ থেকে ৪৩০০ টাকা। এবার সে ধান বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৮০০টাকা। অপরদিকে বিনা ১৭, বিনা ৭৫, বিআর ৫১ ধান ৭৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২১৫০ টাকা থেকে ২২৫০ টাকা। যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৩০০০ থেকে ৩১০০ টাকা।

রানীবন্দরের রফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষেত থেকে ধান কেটে আনার পর বাড়ির উঠানে মাড়াই করছি। এরপর সব ধানই বিক্রি করে কিছু রাখছি পিঠা খেতে।

কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই শেষে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে অন্যান্য ধানও কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটার পর অনেক কৃষক এই জমিতে এখন আলু, ভূট্টা, গমসহ শীতকালীন সবজি চাষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আবার কেউ শুরু করেছেন। আগাম জাতের ধান বীজতলায় বীজ বপনের দিন থেকে মাত্র ১২০ দিনের মধ্যেই আগাম জাতের এসব ধান ঘরে তোলা হচ্ছে।

কাহারোলের কাজী কাটনা গ্রামের নাঈমুল ইসলাম জানান, আগাম জাতের ধান আবাদ করে ধান কাটার পর ওই জমিতে ভূট্টা লাগিয়েছেন তিনি।

কাহারোলের ডহচি গ্রামের কৃষক হরিকান্ত রায় জানান, তিনি এবার আমন মৌসুমে বিভিন্ন জাতের আগাম ধান চাষে লাভবান হয়েছেন। আগাম জাতের ধান কাটার পর সেই জমিতে ভূট্টা চাষ করছি। কাহারোলের বলেয়া হাটে প্রতিমণ প্রকারভেদে ধান বিক্রি হয়েছে ১১৫০ থেকে ১২৮০ টাকা পর্যন্ত।

পাচবাড়ির কৃষক গৌতম দাস বলেন, মৌসুমে আগাম জাতের বিনা ৯০ ধানের দাম বেশি হওয়া এবারও সেই ধান চাষ করেছি। কিন্তু পাইকার বা মিল মালিকরা ধানের দাম বলছেন না। এবার ধানে লোকসান না হলেও লাভের মুখ দেখবো না।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৭১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। এরমধ্যে আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ছিল ৪৫ হাজার হেক্টর। এবার ২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আমন বেশি চাষ হয়েছে। চাল হিসেবে গড় ফলন ধারা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৩.১১ টন।

সংবাদটি লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন